স্পোর্টস ডেস্ক: ম্যানচেস্টারের সবখানে লাল রঙের আধিক্য। ফুটবলে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে তো ‘রেড ডেভিল’ নামে সবাই চেনে। এ যাত্রায় অবশ্য ফুটবল নয়। কুড়ি উনিশ বিশ্বকাপে প্রথম সেমিফাইনালে আজ মুখোমুখি হচ্ছে ভারত-নিউজিল্যান্ড। লাল দুর্গের রাজা হয়ে কে লর্ডসের ফাইনালে ‘লর্ড’ হবেন, আজ সেদিকে চোখ থাকছে ১৩০ কোটি মানুষের। ভারত আরেকটি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেছে। মেঘের নিচে দুর্দান্ত লড়াই হবে। বৃষ্টিও হতে পারে। অবশ্য ভয় একটু কম। সেমিফাইনালে রিজার্ভ ডে আছে। তার পরও খেলাটি যেন হয়। এমন আগুনে ম্যাচ কে হাতছাড়া করতে চায়। নিউজিল্যান্ডের ফাস্ট বোলিং আগুন ঝরিয়েছে এ টুর্নামেন্টে।
ভারতের ব্যাটিং অর্ডারের পরীক্ষা নেবে তারা আজ। এ টুর্নামেন্টে ভারত সবার সঙ্গে খেলেছে। নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে তাদের দেখা হয়নি। বৃষ্টিতে প- হয়ে গিয়েছিল ম্যাচ। তবে সেমিফাইনালে দেখা হয়েই গেল। কোহলি কিশোর বিশ্বকাপ খেলেছিলেন ২০০৮ সালে। মালয়েশিয়ায় অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে টস করতে নেমেছিলেন কোহলি-উইলিয়ামসন।
আজ সিনিয়র লেভেলে আবার আরেকটি বিশ্বকাপে টস করতে যাচ্ছেন দুজন। কোহলি গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বেশ স্মৃতিকাতর হয়ে যান। তিনি বলেন, ‘কাল (আজ) আমি উইলিয়ামসনকে ব্যাপারটি মনে করিয়ে দেব।’ ভারত ও নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপে সাত ম্যাচ খেলেছে। এর মধ্যে চারটি নিউজিল্যান্ড ও তিনটিতে ভারত জিতেছে। একটি ম্যাচ হয়নি বৃষ্টির জন্য। পরিসংখ্যানে এগিয়ে নিউজিল্যান্ড। বিশ্বকাপে ২০০৩ সালের পর দেখা হচ্ছে ভারত-নিউজিল্যান্ডের।
২০০৩ সালে সর্বশেষ দেখায় ভারত ৭ উইকেটে জিতেছিল। আর ১৯৭৫ বিশ্বকাপে প্রথম দেখা হয়েছিল দল দুটির। নিউজিল্যান্ড এখনো বিশ্বকাপ জেতেনি। আর অন্যদিকে ভারত দুবারের চ্যাম্পিয়ন। নিউজিল্যান্ড গতবার ফাইনাল খেলেছে। অবশ্য ফাইনালের শিরোপা নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। আরও একটি ফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা নিউজিল্যান্ডের। ২০১১ সালে ভারত ফাইনাল খেলে শিরোপা জেতে। ২০১৫ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ভারত হেরেছিল অস্ট্রেলিয়ার কাছে। অপর সেমিফাইনালে খেলবে অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড।
স্বাগতিকদের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার লড়াইটা বেশ ‘চরম’ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সামনে অবশ্য টেস্ট হলেও অ্যাশেজ সিরিজ। আগভাগে একটু ওয়ানডে বিশ্বকাপে দেখা হয়ে গেল। তবে দ্বিতীয় সেমিফাইনালটিও একটি ক্ল্যাসিক বটে। ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার লড়াইটা ঐতিহ্যের দিক থেকে অমূল্য! ভারত বেশ মধুর সমস্যায় রয়েছে প্রথম সেমিফাইনাল সামনে রেখে। পেস বোলিংয়ে ভুবনেশ্বর কুমার না মোহাম্মদ সামি খেলবেন এ নিয়ে চিন্তা দেখা গেছে। অন্যদিকে কুলদীপ যাদব নয়তো যুগবেন্দ্র চাহাল একাদশে জায়গা পাবেন। ভারতীয় ব্যাটিং অর্ডারে তেমন কোনো পরিবর্তন নেই বলেই মনে হচ্ছে। নিউজিল্যান্ড বেশ আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলতে নামবে।
কোহলি তার দল নিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী। তিনি ওপেনার রোহিত শর্মাকে নিয়ে আশা করছেন। কোহলি বলেন, ‘আমি রোহিতের কাছে আরও সেঞ্চুরি চাই।’ ৫টি সেঞ্চুরি করে রোহিত ফর্মের তুঙ্গে রয়েছেন।
এ ব্যাপারে কোহলি জানান, ‘আমার দেখা সেরা ব্যাটসম্যান এই টুর্নামেন্টে। আমাদের চাপ অনেক কমিয়ে দিয়েছে।’ কেন উইলিয়ামসনও আশা করছেন দলের কাছ থেকে। কাল কেন সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘আমাদের দলটি কালকের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। সবাই ব্যাট করতে মুখিয়ে আছে। আমার ভালো একটা টুর্নামেন্ট যাচ্ছে। আমরা সব কন্ডিশনে খেলে অভ্যস্ত। এখন আমরা সব কিছুই দেখেছি। তাই আত্মবিশ্বাস রয়েছে টেলরের ওপরেও। দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচের পর নিউজিল্যান্ডের বোলাররা অলআউট করতে পারেনি। এটি কি চিন্তার কারণ কিনা?
কেন বলেছেন, ‘পুরো টুর্নামেন্টে বোলাররা ভালো করেছে। প্রতিদিন পরিস্থিতি বদলায়। কালও বদলে যাবে বলে মনে করি। বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল বলে কথা। কোহলি এর আগে ২০১১ সালে বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলেছেন। আরও একটি ফাইনালে তিনি অধিনায়ক হিসেবে যেতে চাইবেন। নিউজিল্যান্ড অন্যদিকে টানা দ্বিতীয় ফাইনালে যেতে মরিয়া।